২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ সালে অভিজিৎ রায়কে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ কেন নিষ্কৃয় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো এবং খুনীরা কেন সেই সুযোগে নিরাপদে পালিয়ে গেলো, এই রহস্যের মিমাংসা আজও হয়নি; হবে কিনা, সেটাও জানি না। ৫ বছর চলে গেলো আজও আমরা বিচার পেলাম না।
এখনো কি আমরা কাল্পনিক আনসার বাংলার লাটিমের লেত্তি ধরে ঘুরতে থাকবো, আর আসল খুনী পার পেয়ে যাবে।
আরেকটি বিষয় যথেষ্ট খটকা লাগানিয়া ছিলো ঐদিন।অভিজিৎ হত্যার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম বলেছিল, “দেশে একজন জঙ্গি নেত্রী আছেন । তিনি হলেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জঙ্গিদের দমন করতে হবে। তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।” এবং অভিজিৎ হত্যার ঘন্টা খানেকের মধ্যেই আওয়ামী পন্থী শিক্ষক নেতা ও ১৯৭৫ সালে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সমর সেনের উপর হামলার পরিকল্পনাকারী সাবেক জাসদ গণবাহিনী নেতা ড. আনোয়ার হোসেন বলেছিলো, “অভিজিৎ হত্যার দায় নিতে হবে খালেদাকে”। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আশরাফ নামে আরও একজন বলেছিল, “ব্লাডি খালেদা সবকিছুর জন্য দায়ী”। আবার হত্যার ঠিক পরের দিনই সেই মোহাম্মদ নাসিম বলেছিলো, “মান্না-খোকার ফোনালাপের বলি অভিজিৎ।”
বাংলাদেশে ব্লেইম গেইমের রাজনীতি নতুন না। কিন্তু হত্যার আগে-পরে এত সিনক্রোনাইজড দোষারোপ দেখে কিন্তু হত্যার অন্য কোন প্লট এর কথা মাথায় উঁকি দিচ্ছে আজও। যদি এই হত্যাকাণ্ডের সুরাহা না হয়, তাহলে অন্যান্য সুরাহাবিহীন হাই প্রোফাইল খুনের মত এটিও স্টেট স্পন্সর্ড হাই প্রোফাইল কিলিং এর মধ্যে তালিকাভুক্ত হবে।
হত্যার মোটিভ অনুসন্ধানে কে লাভবান, ‘হু ইজ দ্য বেনিফিসিয়ারী’ এই প্রশ্নটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। এই হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক ব্যবহার আওয়ামী লীগ যেভাবে করতে শুরু করেছে, তাতে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য মার্কিন তদন্ত দলের আসা খুবই প্রয়োজন।
– রিফাত আহমেদ পাভেল