‘দাসত্ব’ অর্থ হল যেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন মানুষকে একটি অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করে তার স্বাধীনতাকে কেড়ে নেয়া এবং তাকে পারিশ্রমিক ছাড়াই শ্রম দিতে বাধ্য করার এক বর্বর সংস্কৃতি। একজন মালিক তার দাসকে যে কোন সময়ে বিক্রি করে দিতে পারেন, এবং মালিকই নির্ধারণ করতে পারেন তাকে দিয়ে কী কাজ করানো হবে। এই ক্ষেত্রে দাসের কোন মতামত বা ইচ্ছাকে কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না। প্রাচীনকালে এবং মধ্যযুগে মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাদেরকে দাসে পরিণত করা হতো। দাসত্ব হতে পারে কোন মানুষ শত্রুর হাতে আটক হলে, জন্মসূত্রে বা ক্রয় করার মাধ্যমে। এমনকি উপহার হিসেবেও দাস আদান প্রদান মধ্যযুগে বহুল প্রচলিত ছিল।
ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন, এর অসংখ্য তাফসীর গ্রন্থসমূহ এবং হাদিস গ্রন্থগুলোতে অসংখ্যবার দাসপ্রথাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সেই সকল আয়াত এবং হাদিস সমূহ এই লেখাতে ধীরে ধীরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহই কিছু মানুষকে অন্যদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে, অর্থাৎ আল্লাহই কাউকে বানিয়েছেন দাস আর কাউকে মালিক। একইসাথে, আল্লাহ তিরষ্কারের সুরেই মানুষকে বলেছে, তোমরা তো তোমাদের দাসদের সম্পত্তি বা জীবনোপকরণ থেকে কিছু ভাগ দাও না, তাহলে আল্লাহ কেন তার ইবাদত পাওয়ার অধিকারে ছাড় দেবে? আসুন আয়াতটি এবং মা’আরেফুল কোরআন থেকে আয়াতটির তাফসীর পড়ে নিই –
আল্লাহ জীবনোপকরণে তোমাদের একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাস দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয়না যাতে তারা এ বিষয়ে সমান হয়ে যায়; তাহলে কি তারা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করে?
— Sheikh Mujibur Rahman
আর আল্লাহ রিয্ক তোমাদের কতককে কতকের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন; কিন্তু যাদেরকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, তারা তাদের রিয্ক দাসদাসীদের ফিরিয়ে দেয় না। (এই ভয়ে যে,) তারা তাতে সমান হয়ে যাবে। তবে তারা কি আল্লাহর নিআমতকে অস্বীকার করছে?
— Rawai Al-bayan
আর আল্লাহ্ জীবনোপকরণে তোমাদের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাসদাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয় না যাতে তারা এ বিষয়ে তাদের সমান হয়ে যায় । তবে কি তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ অস্বীকার করছে?
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
– আসিফ মহিউদ্দীন